lifetime deal

অনলাইনে কেনা-বেচা করা মোটামুটি একটা পুরনো মাধ্যম হয়ে গেছে। এখন সেটার প্রক্রিয়াকরণ হয়ে আধুনিকায়ন হচ্ছে মাত্র। কিন্তু মূল ব্যাপার কিন্তু সেই পুরনো আমলেরটাই।

সুতরাং এখানেও আমি যে পদ্ধতিটার কথা বলবো সেটা পুরনো সিস্টেমেরই অংশ। পার্থক্য শুধু এগুলো সবই ডিজিটাল প্রোডাক্ট/টুলস/অ্যাপস।

জ্বি, ঠিকই দেখছেন।

আমি কথা বলবো কিভাবে লাইফটাইম ডিল কিনে রেখে সেটা দিয়ে বিজনেস করে একটা স্মার্ট আমাউন্ট প্রতি মাসে আয় করতে পারবেন। এবং ব্যাপারটা মোটামুটি এস্টাব্লিশড। যদিও এটা পুরোপুরি এলাউড না। কিন্তু অলিখিতভাবে সবাই মেনে নিচ্ছেন।

উদাহরণ দেয়া যাক:

২০২১-এর জানুয়ারি/ফেব্রুয়ারিতে আমি মার্কেটমিউজের লাইফটাইম ডিল প্রমোট করেছিলাম। বেজ মূল্য ছিলো ৬৯ ডলার (এক কোড), যারা তিনটা কোড কিনেছেন ২০৭ ডলার দিয়ে, সেটার বর্তমান বাজার মূল্য ৭০০-১১০০ ডলার। এরকমভাবে আরও বেশ কিছু টুলস চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে বর্তমানে।

হুম, এ কথা ঠিক, সব টুলের দাম এতো বেশি হয় না। কিন্তু মোটামুটি সব টুলই বেশি দামে বিক্রি করা যায়। এরকম ভুড়ি ভুড়ি উদাহরণ দেয়া যাবে। সাম্প্রতিক সময়ে আমি স্কেলনাট মার্কেটিং করেছিলাম। টুলটা এতো অসাধারণ, আড়াইশো ডলারের ডিল মাত্র এক মাস পরেই হয়ে গেছে ৬০০-৭০০ ডলার। এমন কোনো দিন নেই যেদিন আমি কারও না কারও কাছ থেকে ফেসবুক মেসেঞ্জারে রিকুয়েস্ট পাচ্ছি না স্কেলনাট ডিল ম্যানেজ করে দেয়ার জন্য!

অদ্ভুত হলেও সত্যি।

আকুরেংকার কীওয়ার্ড রেংক ট্র্যাকারের লাইফটাইম ডিলের মূল্য ছিলো ৩৯ ডলার। যেটা বর্তমানে ২০০ ডলার দামে বিক্রি হচ্ছে। ওয়েব ভিডিও ৯৫ ডলারে বিক্রি হয়েছে অ্যাপসুমোতে এইতো মাত্র দুই মাস আগে। আর বর্তমানে এটার বাজার মূল্য ২৫০ ডলার।

ইনভিডিওর কথা বললেতো আরও অবাক হয়ে যাবেন।

এক কোডের দাম ছিলো ৪৯ ডলার। আর ৫ কোডের লাইফটাইম ডিলের প্যাকেজ মূল্য ছিলো ২৪৭ ডলার। বর্তমানে এটা বিক্রি হচ্ছ ৫৫০-৭৫০ ডলারে। তবে অবাক করা বিষয় হচ্ছে- ২৪৭ ডলার প্যাকেজটায় আনলিমিটেড ভিডিও এবং মেম্বার এড করা যায়। ফলে অনেকে পুরো লাইফটাইম ডিলটা বিক্রি না করে ৩০-৫০ ডলারে একটা মেম্বার বিক্রি করছেন। চাইলে তিন ১০০ বা তারও বেশি মেম্বারও বিক্রি করতে পারবেন। তাহলে হিসেব করে দেখেন ২৪৭ ডলার মূল্যের টুল দিয়ে কত লাভ করছেন!

কী, মাথা ঘুরাচ্ছে?

আসলেই লাইফটাইম ডিল দুনিয়াটা একটা মজার বিষয়। যদিও এখানেও অনেকে নেগেটিভ বিষয় খুঁজে পান। বলাই বাহুল্য, এটা অত্যন্ত দুঃখজনক একটা ব্যাপার।

লাইফটাইম ডিল কি খারাপ? – নিউবিদের জন্য মরণফাঁদ?

উপরের কথার রেশ ধরেই বলছি- অনেকের ধারণা লাইফটাইম ডিল নতুনদের জন্য একটা মরণফাঁদ। যে ফাঁদে আমি সবাইকে জড়িত করছি। এবং দুঃখজনক হলো- যে অথোরিটি এইড গ্রুপে নাওয়া-খাওয়া-কাজ বন্ধ রেখে মানুষকে হেল্প করি, সেখানে এসেও অভিযোগ করেন মানুষ যে, তিনি আমার পরামর্শে লাইফটাইম ডিল কিনে ঠকেছেন। তখন আমার কাছে মনে হয়, আসলে তিনি কথাটা আমাকে কষ্ট দেয়ার জন্যেই বলেছেন।

কেন বললাম?

চলুন লজিক্যালি ব্যাপারটা ব্যাখ্যা করার চেষ্টা করি।

প্রায় প্রত্যেকটা লাইফটাইম ডিল কেনার শর্তসমূহতে স্পষ্ট লেখা আছে- ওই টুলটা কেনার ৩০-৯০ দিনের মধ্যে কোনোরকম জবাবদিহী ছাড়াই সম্পূর্ণ টাকা রিফান্ড নেয়া যাবে। তাহলে আমাকে এই কথাটা বলুন- একটা টুল কেনার ৩০ দিন বা ৬০ দিন বা ৯০ দিনের মধ্যে কি ওই টুলটা নিজের কাজে লাগবে কি লাগবে না সেটা টেস্ট করা যায় না? যথেষ্ট নয় সময়টা?

যদি তা-ই হয়, তাহলে একটা লাইফটাইম টুল কেনার পর সেটা কেনাতে লস, কেমন করে বলতে পারেন?

ওকে, ধরে নিলাম আপনি এই ৩০ বা ৬০ বা ৯০ দিনের মধ্যে টেস্ট করতে পারেন নি। হয়তো আপনি অসুস্থ্য ছিলেন, বা আপনার আত্মীয় অসুখে ছিলেন বা যেকোনো কারণেই হোক আপনি রিফান্ড পিরিয়ডটা পেরিয়ে যাবার পর দেখলেন টুলটা আপনার জন্য পারফেক্ট নয়, তাহলেও কিন্তু আপনি বলতে পারেন না টুলটা কিনে আপনার লস হয়েছে?

কেন?

কারণ, এই যে আজকের লেখা, এই অপশনটা রয়েছে। একটা টুল আপনার দরকার না-ই হতে পারে। কিন্তু আরেকজন কিনতে পারেন নি বলে আফসোস করছেন। আবার বাংলাদেশের অনেকের কার্ড বা পেপাল নেই টুল কেনার জন্য। তাদের কাছেও আপনি বিক্রি করে দিতে পারেন। এমনকি বেশি দামেও।

তো, এবার আমাকে কষ্ট করে এটা বলুন, কেমন করে একটা টুল কিনে একজন নিউবি দূরের কথা, এক্সপার্টইবা কেমন করে ক্ষতির সম্মুখীন হন?

ব্যাপারটা কি আমি লজিক্যালি বুঝাতে পেরেছি?

সো আশা করবো, বিষয়টা চিন্তা করবেন না। একজন কেউ বলে দিয়েছে লাইফটাইম ডিল কেনা নিউবিদের জন্য ক্ষতির, সেটা মেনে নেয়ার দরকার নেই। মেনে নেয়ার দরকার নেই আমি বলেছি- নিউবিদের জন্য লাইফটাইম ডিল কেনা লাভজনক। আমি রিকুয়েস্ট করবো, আপনি বরং বিষয়টা নিজেই যুক্তির ভেতর দিয়ে ভেবে দেখুন। আশা করি সঠিক উত্তরটা পেয়ে যাবেন।

আসুন লেখাটার দ্বিতীয় ধাপে যাই।

নোট: আমি আমার সিক্রেট কমিউনিটি এবং লাইভ প্রজেক্ট-এর মেম্বারদের জন্য এই ব্যাপারটা আরও বিস্তারিত বিস্তারিত ভিডিও টিউটোরিয়াল আকারে দেয়ার চেষ্টা করবো। সুতরাং এই লেখাটা যদি মেম্বাররা পড়ে থাকেন, তাহলে ওয়েট করুন, প্লিজ। অনেক বড় চমক আসছে, ইনশাআল্লাহ।

দুই.

ওকে ফাইন, বুঝতে পারলাম লাইফটাইম ডিলের টুলগুলো কিনে স্মার্ট এমাউন্ট লাভ করা যায় রিসেল করে।

কিন্তু কিভাবে?

কোথায় রিসেল করবো?

আর কেমন করেই বা বুঝতে পারবো কোন টুলগুলো বেশি দামে বিক্রি করা যাবে?

আমি এই ব্যাপারগুলো বুঝিয়ে বলতে চেষ্টা করবো, ইনশাআল্লাহ।

লাইফটাইম টুল কোথায় রিসেল করবেন?

প্রথমে আপনাকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে আপনি আসলেই এই কাজটা করবেন কিনা? নাকি জাস্ট নিজের প্রয়োজনে টুল কিনবেন, এবং প্রয়োজন না লাগলে কিংবা রিফান্ড করতে পারলে কিংবা অন্যের উপকার করার জন্য রিসেল করবেন?

কেন বলছি এ কথা?

কারণ, লাইফটাইম ডিল রিসেল করাটাকে অনেকে প্রফেশন হিসেবেও নিয়ে নিয়েছেন। অনলাইনে ঘুরলেই দেখতে পারবেন। যে কারণে আসল প্রফেশনালদের পাশাপাশি অনেক স্ক্যামারও যুক্ত হয়ে গেছেন মার্কেটে।

দ্বিতীয় কথা হলো- এখানে বিজনেস করতে গেলে মোটামুটি একটা বাজেট লাগবে। আর লাগবে পেমেন্ট মেথড। যদি আপনার প্রথমটা নাও থাকে, তাও শুরু করতে পারবেন অল্প অল্প ইনভেস্ট করে। কিন্তু দ্বিতীয়টা না থাকলে, অর্থাৎ আপনার যদি পেমেন্ট মেথড না থাকে, তাহলে আপনার জন্য এই কাজ নয়। অন্য কোনো প্রফেশনে যেতে হবে। আমি দুঃখিত, বিকল্প কোনো অপশন আমার জানা নেই।

তৃতীয় কথা হলো- যদি প্রয়োজনে টুল কেনেন এবং প্রয়োজন না থাকলে বা ভালো দাম পেলে বিক্রি করে দেন, এরকম হয়ে থাকলে, আমি মনে করি আপনার অন্য বিজনেসের পাশপাশি এখান থেকেও একটা চমৎকার রিটার্ন আসতে পারে একটু চেষ্টা করলেই। আর ট্রাস্ট ব্যাপারটা যদি বিল্ডআপ করতে পারেন, দেখবেন প্রচুর কাস্টমার পাচ্ছেন শুধুমাত্র রেফারের কারণে।

বিশ্বাস করুন, এরকম কাস্টমার প্রচুর আছে আমাদের কমিউনিটিতে।

চতুর্থ কথা হলো- আপনি কোথায় এই বিজনেসটা করবেন?

বাংলাদেশের কমিউনিটিতে? নাকি ইন্টারন্যাশনাল কমিউনিটিতে?

যেহেতু আমাদের পেপাল নেই, তাই ইন্টারন্যাশনাল মার্কেটপ্লেসে শুরু করতে পারেন। ফেসবুকে প্রচুর গ্রুপ আছে এই সংক্রান্ত। যেখানে অ্যাপসুমো, ডিলিফাই কিংবা এরকম মার্কেটপ্লেসের লাইফটাইম ডিলগুলো রিসেল হয়।

আপনি সেখান থেকে যেমন প্রয়োজনীয় টুল কিনতে পারবেন, তেমনি বিক্রিও করতে পারবেন সেখানে।

আর যদি বাংলাদেশী কমিউনিটি েকরতে চান, তাহলে পারসোনাল ফেসবুক অথোরিটি তৈরি করতে পারেন।

আমি আমার সিক্রেট কমিউনিটির মেম্বার এবং লাইভ প্রজেক্ট মেম্বারদের জন্য এরকম একটা মার্কেটপ্লেসে খুব শিগগিরই তৈরি করতে যাচ্ছি, ইনশাআল্লাহ। কিভাবে সেটা করবো, তা পাবলিকলি এখনই বলবো না যেহেতু ওটা একটু ব্যতিক্রম আইডিয়া।

তবে আপনি গুগলে একটু ঘাটাঘাটি করেন, তাহলে অনেক তথ্য পেয়ে যাবেন। আর আমিও শিগগিরই আমার প্রজেক্টটা রান করার পর আপনাদের সাথে বিস্তারিত শেয়ার করবে, ইনশআল্লাহ।

কেমন টুল কিনলে লাভবান হওয়া যাবে?

এই বিজনেসে এই জায়গা হলো একটু ক্রিটিক্যাল। কোনো মাপকাঠি নেই। এরকম অনেক টুল আছে দেখবেন পরিচিত না, কিন্তু আপনার যদি নিস সাইট জগতে কিংবা ডিজিটাল মার্কেটিং দুনিয়ায় একটু ধারণা থাকে, তাহলে খুব সহজেই বুঝে যাবেন কোন টুলগুলো কিনে রাখলে বেশি লাভ করা সম্ভব হবে। আমি এখানে কিছু হিন্টস দিচ্ছি:-

  • যে টুলটা কিনবেন, সেটার ব্যাকগ্রাউন্ড চেক করুন। টুলটা কিন নতুন নাকি অনেক আগে থেকেই মার্কেটে আছে দেখুন।
  • টুলটার রিভিউ কেমন?
  • টুলটার ফাউন্ডার কোন দেশী এবং তার ব্যাকগ্রাউন্ড কেমন (এই ক্ষেত্রে লিংকড-ইন প্রোফাইল বেশ কাজের।
  • ইন্টারনাশনাল কমিউনিটিগুলোতে এই টুলটার ব্যাপারে ইউজারদের রিভিউ কেমন?
  • গুগলে সার্চ করে দেখুন এই টুলটা সম্পর্কে কেমন কথাবার্তা হয়েছে।

এরকম কিছু বিষয় নোট করে নিয়ে যদি একটু মনযোগ দিয়ে কাজ করেন, তাহলে আশা করা যায় খুব সহজেই চিনতে পারবেন কোন টুল কিনে রাখলে ভবিষ্যতে লাভবান হতে পারবেন।

নোট: আমাদের বাংলাদেশী এক ভাই লাইফটাইম ডিল রিসেল করে বেশ ভালো একটা অবস্থান তৈরি করে ফেলেছেন। আপনারা চাইলে উনার একটা ইন্টারভিউ নিতে পারি আপনাদের জন্য। যেখান থেকে আরও বিস্তারিত জানতে পারবেন। আপনারা কি চান উনার সাথে আমি কথা বলি? কমেন্টে জানান।

ওভারঅল কথা

তো, আর কী কথা?

আশা করি সুন্দর একটা তথ্য পেয়েছেন। কিন্তু হুট করেই শুরু করতে যাবেন না। একটু সময় নিয়ে ধৈর্য়্য ধরে আগান সুন্দর একটা পরিকল্পনা করে।

এটাকেও বিজনেস হিসেবে নিতে পারেন।

সবাই ভালো থুকন সবসময়।
হ্যাপি নিস সাইট মার্কেটিং!

2 Comments

  1. অনেক তথ্যসমৃদ্ধ আর্টিকেল ছিল।

    ঐ ভাইয়ের ইন্টারভিউর জন্য আগ্রহ বোধ করছি।

  2. Naimul Hasan says:

    Excellent write-up. I absolutely love this site. Keep writing!

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *